শিশু হোক বা বয়স্ক, দুধ এমনই একটা খাবার যা গুণের দিক থেকে বহুমুখী। তবে শুধু দুধ কেন, দুধের সমস্ত উপাদানই পুষ্টির সমাহার। যদিও দুধ স্বাদে ও গন্ধে অনেকের কাছেই বাদের খাতায়। তবুও সুষম ডায়েটের তালিকায় অন্যতম খাদ্য উপাদান। কারও দুধ ভালো লাগবে, কারও ঘি-মাখন বা পনির-দই, এই বিষয়টি ব্যক্তিবিশেষের উপর নির্ভর করে। তবে দুধ না দুগ্ধজাত খাবার কোনটা বেশি ভালো, তা জানা জরুরি। জেনে নিন দুগ্ধজাত খাবারের কোনটা, কতটা খাবেন এবং কেন খাবেন।
দুধ: এই সুষম খাদ্যে নয় রকম এসেন্সিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে। এছাড়া প্রোটিন, স্যাচুরেটেড এবং আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, ভালো কার্বোহাইড্রেট যেমন-ল্যাকটোজ, গ্যালাকটোজ, ভিটামিন-এ, ডি, বি-১২ সমৃদ্ধ দুধ।
দই: দই ক্যালশিয়াম, ভিটামিন এ, ডি, বি-১২ সমৃদ্ধ। কোষ্ঠকাঠিন্য, টাইপ টু ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলাস রোগের ক্ষেত্রেও খাওয়া যেতে পারে। ক্ষতিকারক টক্সিনের হাত থেকে বাঁচায়। এর মধ্যে উপস্থিত প্রোটিন উপাদানগুলি পেশির বৃদ্ধিতে এবং টিস্যু ঠিক রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কমায় ক্যানসারের ঝুঁকিও। ছানা/পনির: ক্যালশিয়াম এবং বায়ো অ্যাকটিভ পেপটাইড-এনজাইম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়াম কমিয়ে দেয় ক্যানসারের প্রবণতা, গর্ভবতীদের জন্যও খুব উপকারী। এর পাশাপাশি ছানার জলও বিশেষ পুষ্টিগুণে ভরা। রাইবোফ্ল্যাবিন নামক ভিটামিনটি শারীরিক বৃদ্ধিতে এবং শক্তির জোগানে গুরুত্বপূর্ণ। হার্টের সমস্যা, হরমোনাল ইমব্যালেন্স, কিডনির সমস্যা, লো ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই আটা মাখার সময় কিংবা কোনও ডাল রান্না করার সময় এই জল ব্যবহার করতে পারেন।
ঘি: অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন-এ, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর এই খাবার। এটি অ্যান্টি-আর্থ্রাইটিস, গাঁটে ব্যথার সমস্যা দূর করে, চুলের স্বাস্থ্য ও ত্বক ভালো রাখে। বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে খান। নইলে বিপদ। মাখন: এতে থাকে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং ক্যালশিয়াম, যা শরীর সুস্থ রাখে। ক্যালোরি শরীরে এনার্জির ঘাটতি পূরণ করে। চোখ, হাড় ও ত্বকের জন্য উপকারী। তবে বেশি পরিমাণে খাওয়া মোটেই ভালো না। অত্যাধিক স্যাচুরেটেড ফ্যাট ডেকে আনে হার্টের সমস্যা, ওজন বাড়ায়। কম পরিমাণে খান সুস্থ থাকবেন। মার্জারিনও খাবারের মধ্যে বুঝেশুনে রাখুন। এতে থাকে ট্রান্স ফ্যাট যা ভালো কোলেস্টেরল কমিয়ে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। কিছু জিনিস ক্ষতিও করে
মিষ্টি, আইসক্রিম: এতে অত্যধিক পরিমাণে শর্করা ও ক্যালোরির উপস্থিতি শরীরের জন্য বেশি পরিমাণে মোটেই ভালো নয়। মাঝেমধ্যে কিছু দিন অন্তর অন্তর খেতে পারেন।
কোনটা, কতটা খাবেন?
শরীরে ক্যালশিয়ামের মাত্রা সঠিক পরিমাণে জোগান দিতে দুধের বিকল্প আর কিছু নেই। তবে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স, অম্বলের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে সোয়ামিল্ক ও কিংবা দই খেতে পারেন।