মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণায় কারখানার জন্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নশো নিরাবব্বই বছরের জন্য এক টাকায় জমি লিজ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা চলছিল কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার ছিল শুনানি। এদিন রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তে সাময়িক হস্তক্ষেপ করল আদালত। চন্দ্রকোণায় প্রয়াগ গোষ্ঠীকে সাড়ে সাতশো একর জমি বরাদ্দ করে রাজ্য সরকার। প্রকল্পে দু হাজার সাতশো কোটি টাকা বিনিয়োগ করে তারা। পরে চিটফান্ড কাণ্ডে নাম জড়ায় প্রয়াগ গোষ্ঠীর। অভিযোগ ওঠে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি তোলে প্রয়াগ। ফিল্ম সিটিতে বিনিয়োগের সাড়ে সাতশো কোটি টাকা এভাবেই তোলা হয়। এরপর প্রয়াগ গোষ্ঠীর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। তালিকায় ছিল ওই সাড়ে সাতশো একর জমিও। আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে রাজ্য সরকার প্রয়াগের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। অভিযোগ ওঠে ওই সাড়ে সাতশো একর থেকেই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজ্য সরকার দিয়েছিল।
কেন সৌরভকে এক টাকার লিজে ওই জমি দেওয়া হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে আদালতে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। শেখ মাসুদ নামে একজন। আদালতের নির্দেশ থেকে জানা যায় এই মামলার রায়ের ওপর নির্ভর করেই জমির মালিকানার ভবিয্ৎ স্থির হবে। যে সাড়ে তিনশো একর জমি নিয়ে বিতর্ক, সেই জমির মধ্যে ১১.২৮ একর জমি শৈলেন্দ্র তালুকদার কমিটির হাতে রয়েছে। এখন রাজ্যের দায়িত্ব জমির দখল পেতে কমিটির দ্বারস্থ হওয়া। এমন পরিস্থিতিতে ওই জমি রাজ্য সরকার কোনওরকম কোনও কাজে ব্যবহার করতে পারবে না। এই সময়ের মধ্যে প্রয়াগ গোষ্ঠীতে চন্দ্রকোণার মোট জমি, নাগরিকদের মধ্যে বিশ্বাস ফিরে পেতে তা খতিয়ে দেখা হবে। এ নিয়ে সবপক্ষকে হলফনামা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিতে হবে রাজ্য সরকারকে। সপ্তা পাঁচেক পরে এ নিয়ে শুনানি হবে। আদালতের নির্দেশ, রাজ্য সরকার, সেবি এবং তালুকদার কমিটি চন্দ্রকোণার ওই জমি খতিয়ে দেখবে। সেখানে ফিল্ম সিটির জন্য যে সব পরিকাঠামো তৈরি হয়েছিল, তার বাজারমূল্য খতিয়ে দেখা হবে। আগামী শুনানিতে তার একটা বাজারদর অনুযায়ী হিসাব আদালতে জমা দিতে হবে রাজ্যকে।