সেমিনার রুমে পড়ে আছে মেয়ের নিথর দেহ। বাইরে অপেক্ষমাণমৃতার মা। এক দু ঘণ্টা নয়। পাক্কা সাড়ে তিন ঘণ্টা। মাকে দেখতে দেওয়া হয়নি মেয়েরদেহ। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে মেয়ের দেহ মাকেদেখতে দেওয়া হয়। আদালতে এ কথাই জানিয়েছিলেন মৃত তরুণী চিকিৎসকের মা। অকু্স্থলেঢোকার অনুমতি মেলেনি সহকর্মী, সংবাদমাধ্যমের লোকজনদের। এত না-য়ের মধ্যে সেমিনারহলে দেখা গিয়েছিল বহিরাগতদের। ওইসময়ে তাঁদের কারোরই থাকার কথা ছিল না। তার বদলেসেমিনার হলের বাইরের ভিডিওয় দেখা গিয়েছে আইনজীবী শান্তনু দে-কে। এই শান্তনু হলেনপ্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ছায়াসঙ্গী। কিন্তু সেখানে তিন কী করতে গিয়েছিলেনতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্নের পর প্রশ্ন। সেমিনার হলে দেখা গিয়েছে সন্দীপ ঘনিষ্ঠফরেনসিকের চিকিৎসক দেবাশিস সোমকে। তাঁকে নিজাম প্যালেসে জেরা করেছে সিবিআই।ঘটনাচক্রে তিনি আরজি করের সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নন। কিন্তু ঘটনার পরমুহূর্তেসেমিনার হলে দেখা গিয়েছে। তিনি হেলথ ডিপার্টমেন্টে পোস্টেড। প্রশ্ন তাহলে তিনিসেমিনার রুমে এলেন কিভাবে? ঘটনার পর সেখানে কি করছিলেন? এরপরপ্রসূন চট্টোপাধ্যায়। তিনিও আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ।স্বাস্থ্য ভবনের একাংশের মতে, প্রসূন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেডেটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করেন। যেখানে মৃত তরুণী চিকিৎসকের দেহ পাওয়াগিয়েছিল, সেখানে তিনি কী কাজে এসেছিলেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাঁদের কে ডেকেপাঠিয়েছিল। তাঁরা কি তথ্যপ্রমাণ লোপের জন্যই সেখানে এসেছিলেন ? চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য “যেখানেভাঙচুর করা হয়েছিল সংস্কারের নামে, ক্রাইম সিনে আশপাশেরএলাকা ভাঙা হয়। আমরা জেনেছিলাম, উপস্থিত ইঞ্জিনিয়ররা ওয়ার্কঅর্ডার ছাড়া কাজ করতে চাননি, তবুও চাপ দিয়ে তাঁদেরকে দিয়েকাজ করানো হয়েছে। ওইদিন পদাধিকারী যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরাতদন্ত বিলম্ব করতে চেয়েছিলেন।”আইনজীবীবিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, তাঁর আশঙ্কা ধৃত আসলে দাবারবড়ে। একজন সিভিক ভলান্টিয়র চিকিৎসককে খুন করল, কেউ দেখলেননা, সেটা বিশ্বাস করা কঠিন। যতই প্রভাবশালী হোক না কেন,হাসপাতালের চিকিৎসকের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হয় কীভাবে? ভিডিওটি ঘিরে প্রশ্ন অনেক। খোঁজা হচ্ছে উত্তরও।