কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় গত ২ দিন ধরে ধরপাকড় চালিয়েছে পুলিশ। শনিবার তা ৩ দিনে পা দিল। এদিনও যে সেই ধরপাকড় চলবে সেটা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে লালবাজার। কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২৪জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এই ভাঙচুরের ঘটনায়। শনিবার সকালে সেই ধড়পাকড়ের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০। কেননা শনিবার সকালের মধ্যেই আরও ৬জনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। শুক্রবার রাতজুড়ে অভিযান চালিয়ে এই ৬জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দফায় দফায় এদের নাম পরিচয় সামনে আনছে পুলিশ। দেখা যাচ্ছে যারা গ্রেফতার হচ্ছে তাদের বয়স ১৯ থেকে ৩৫’র মধ্যে। গ্রেফতার হওয়া ৩০জনের মধ্যে এক মহিলাও আছেন বলে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার রাত পর্যন্ত পুলিশ যাদের গ্রেফতার করেছে সেই ২৪জন হল বারতলার অভিজিৎ সাউ(২৪) ও করসিনি রাজগুপ্ত(৩৪), উল্টোডাঙার বাসিন্দা শান্তনু ঘোষ(২৪), তনবির আলম(১৯), দেবাশিস মণ্ডল ওরফে বাবাই(২৯), রাজু বাগ ওরফে পোকাই(২৮), সুরজিৎ কর্মকার(৩৪) ও নবীন সিংহ ওরফে লাল(২১), নিমতার বাসিন্দা সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য(৩১) ও অরিজিৎ বেরা(২৯), মানিকতলার সৌম্যদীপ মাহিষ ওরফে বুম্বা(২২), শুভদীপ কুন্ডু ওরফে সানি(২২) ও মানসকুমার বিশ্বাস(২৪), হাওড়ার অশোকপুরের বাসিন্দা চিরাগ ঘাগারিয়া(২৩), দক্ষিণেশ্বরের বাসিন্দা শান্তনু সরকার(২৫), ক্ষুদিরাম বোস সরণির বাসিন্দা মহম্মদ আসলাম(১৯), ফুলবাগানের বাসিন্দা প্রদীপ সেন ওরফে পাপাই(২২), লেক টাউনের বাসিন্দা শেখ সজন(২৮), মুরারীপুকুর রোডের বাসিন্দা সৌরভ দে ওরফে বাবু(২৩), জোড়াসাঁকোর বাসিন্দা পল ঘোষ(২৯), চিৎপুরের বাসিন্দা ঋষিকান্ত মিশ্র ওরফে ঋষি(৩৫), চিৎপুরের বাসিন্দা রোহিত বারুই(২৪) এবং নাগেরবাজারের বাসিন্দা সৌমিক দাস(২৪)। ধৃতদের মধ্যে যে মহিলা রয়েছেন তাঁর নাম রুমা দাস (২৭)। তিনি বরাহনগরের বাসিন্দা।
এদিকে ইউনাইটেড ডক্টর ফোরাম অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ করার জেরে নাকি ৪৩ জন চিকিৎসককে বদলি করেছে। একদিনে এই সব বদলির নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। গতকালই আর জি করের চিকিৎসকের অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে রাজপথে হেঁটেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে তিনি চিকিৎসকদের আন্দোলনকে সমর্থন করেছিলেন। তবে জনসাধারণের স্বার্থে আন্দোলন প্রত্যাহারেরও আর্জি জানিয়েছিলেন। এমনকী আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের ‘পা ধরার’ কথাও বলেছিলেন মমতা। আর সেই মমতার সরকার এবার চিকিৎসকদের বদলি করে আন্দোলনকে দুর্বল করতে চাইছেন বলে অভিযোগ তুললো ইউনাইটেড ডক্টর ফোরাম অ্যাসোসিয়েশন। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, নিয়মমাফিক বদলি করা হয়েছে। এর সঙ্গে আর জি করের ঘটনার কোনও যোগ নেই।