একজন অভিভাবক হিসেবে, আপনার সন্তানের বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি প্রায়ই উপেক্ষিত ভিটামিন হল ভিটামিন ডি, যা শক্তিশালী হাড়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নবজাতকেরা যদিও মায়ের দুধ থেকেই ভিটামিন ডি পেয়ে যায় অনেকটাই। কিন্তু যে শিশুরা স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে তাদের ক্ষেত্রেই ভিটামিন ডি-এর অভাব হয় বেশি। এর কারণও রয়েছে। পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, “এখনকার শিশুরা আর বাইরে বেরিয়ে খেলাধূলা করে না খুব একটা। গায়ে রোদও লাগে না। তাই বাড়ন্ত শিশুদেরই ভিটামিন ডি-এর অভাব হচ্ছে বেশি। এর ঘাটতি মেটাতে প্রথমেই ওষুধ বা সাপ্লিমেন্টের উপর ভরসা করা ঠিক হবে না। তার থেকে খাওয়াদাওয়ায় নজর দিতে হবে। বাবা-মায়েদের রোজ এমন খাবার খাওয়াতে হবে শিশুকে, যাতে তাদের শরীরে ভিটামিন-ডি এর চাহিদা অনেকটাই মিটে যায়।” ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে যে কেবল হাড়ের ক্ষয় হবে বা হাড়ের গঠন মজবুত হবে না তা নয়, সমস্যা আরও বিভিন্ন দিক থেকে দেখা দেবে। সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায় ঠিকই, কিন্তু শুধুমাত্র ত্বক থেকে তা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লিভারে পৌঁছনো ও সেখান থেকে শরীরে ছড়িয়ে পড়ার যে পদ্ধতি, তা খুবই ধীর গতিতে হয়। তবে সে ক্ষেত্রে খাবার থেকেই একমাত্র সরাসরি ভিটামিন ডি শরীরে ঢুকতে পারে।
কী কী খাওয়াবেন শিশুদের?
১) মাছ খাওয়াতে হবে রোজ। বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছে ভিটামিন ডি বেশি থাকে। যেমন ভেটকি, পমফ্রেট মাছ খাওয়াতে পারেন। আবার ছোট মাছ যেমন মৌরলায় ভিটামিন ডি আছে। ইলিশ মাছেও প্রচুর ভিটামিন ডি থাকে। আরও একটি মাছ হল লটে। এই মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে।
২) ডিমের কুসুমে ভিটামিন ডি থাকে। তবে ডিমের খোলায় ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বেশি।
৩) দুধ ও দুগ্ধজাত যে কোনও খাবারেই ভিটামিন ডি ভালো পরিমাণে থাকে। দুধ, পনির, ছানা শিশুদের খাওয়ালে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা বৃদ্ধি পাবে।
৪) ভিটামিন ডি-এর জন্য ফ্যাট আছে এমন খাবার খেতে হবে, যার মধ্যে মাছ, মাংস, ডিমই পড়ছে।
৫) নিরামিষ খাবারে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম। শিশু যদি নিরামিষ খাবার পছন্দ করে, তা হলে বিভিন্ন রকম বাদাম খাওয়াতে পারেন। মাশরুমের স্যুপ খাওয়াতে পারেন শিশুকে।