পশ্চিমবঙ্গ ‘ছাত্র সমাজে’র আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়িকে গতকাল মুক্তির নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। দুপুর দুটোর মধ্যে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। নবান্ন অভিযানে গোলমালের অভিযোগে গ্রেফতার সংগঠনের অন্যতম আহ্বায়ক সায়ন লাহিড়ীকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহ। আদালতের নির্দেশ মতো মুক্তি পেয়েছেন সায়ন। এরই মধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল রাজ্য সরকার। কেন সায়নকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তা নিয়ে শুক্রবারই বিচারপতি সিংহের একক বেঞ্চে একের পর এক প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করা হয়েছিল রাজ্যকে।
রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়েছিল, নবান্ন অভিযান কর্মসূচির যে ডাক দিয়েছিলেন সায়ন সেখানে পুলিশের কোনও অনুমতি ছিল না। এর পরও জমায়েত হয়েছে, মিছিলও হয়েছে। বিচারপতি সিংহের এজলাসে রাজ্যের যুক্তি ছিল, ওই কর্মসূচি কোনও ভাবেই শান্তিপূর্ণ ছিল না। সায়নের গ্রেফতারির পক্ষে যুক্তি সাজাতে, ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বও সংযোজনের চেষ্টা করেছিলেন রাজ্যের আইনজীবী। তবে বিচারপতি সিংহ প্রশ্ন করেছিলেন যে, সায়ন কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কি না। তার জবাবে রাজ্য জানিয়েছিল, তিনি ছাত্রনেতা। এ কথা শুনে বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, “ওই ছাত্রনেতাকে কী ভাবে এত প্রভাবশালী বলা হচ্ছে? তিনি কি এতই জনপ্রিয় যে, ডাক দিলেন আর হাজার হাজার লোক জড়ো হয়ে গেল? তাঁর কী অতীত রয়েছে? সায়ন কি সক্রিয় রাজনীতিতে রয়েছেন?” পর্যবেক্ষণে আদালত এ-ও জানিয়েছিল, সায়ন কোনও ‘প্রভাবশালী’ নন। নবান্ন অভিযানে গোলমালের ঘটনায় গ্রেফতারির আগে সায়নের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই, সে কথাও উঠে এসেছিল আদালতের পর্যবেক্ষণে। তবে রাজ্যের যুক্তি ছিল, সায়ন প্ররোচনামূলক বক্তব্য রেখেছিলেন। যদিও রাজ্যের ওই যুক্তি ধোপে টেকেনি বিচারপতি সিংহের এজলাসে। ধৃত সায়নের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আর সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার।