তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পর নরেন্দ্র মোদিকে প্রথম চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। চিঠিতে ১০০ দিনের টাকা আদায়, ৩ ফৌজদারি আইন কার্যকর করা পিছিয়ে দেওয়া ইত্যাদি নিয়ে আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ১ জুলাই থেকে গোটা দেশে তিন নতুন ফৌজদারি আইন কার্যকর করার কথা রয়েছে। এই তিন ফৌজদারি আইন এখনই কার্যকর না করার অনুরোধ জানিয়েই প্রধানমন্ত্রী মোদিকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর গত লোকসভা অধিবেশনে এই তিনটি বিল পাশ হয়েছিল লোকসভা এবং রাজ্যসভায়। কিন্তু বিল পাসের সময় বিরোধী দলের সাংসদরা প্রবল প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তারপরেই ১৪৬ জন বিরোধী দলের সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়।
কাজেই এক কথায় একতরফা ভাবেই মোদি সরকার সংসদে এই বিল পাস করিয়েছিল। এবং ১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়ার কথা সেই তিন ফৌজদারি আইনের। কিন্তু এই তিনটি ফৌজদারি আইন কার্যকর করার সিদ্ধান্ত আপাতত পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন তিনি। এবং অবিলম্বে এই তিন ক্রিমিনাল আইন প্রত্যাহার করার কথা বলেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। এদিকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল যে ১ জুলাই থেকে এই নতুন ফৌজদারি আইন কার্যকর হবে গোটা দেশে। এই তিন আইন কার্যকর হলে ব্রিটিশ আমলে তৈরি ভারতীয় দণ্ডবিধির অবলুপ্তি ঘটবে। এবং ১৮৬০ সালে তৈরি হওয়া ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) নতুন ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ আইন নামে পরিচিত হবে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) পরিবর্তিত হয়ে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ হবে এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’-এর বদলে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য আইন’ কার্যকর হবে।
আগেই তৃণমূল কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দল সংসদে এই নয়া তিন ফৌজদারি আইনের বিরোধিতায় সরব হয়েছিলেন। কিন্তু তাতে আমোল দেয়নি মোদি সরকার। বিরোধিতায় যাঁরা সরব হয়েছিলেন তাঁদের সাসপেন্ড করা হয়। কিন্তু ২০২৪-র লোকসভা ভোটের পর সংসদের চিত্রটা একটু বদল হয়েছে। ভোট ব্যাঙ্কে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। শরিকদের সাহায্য নিয়ে সরকার গড়তে হয়েছে মোদিকে। আর বিরোধীদের সংখ্যা বেড়েছে। কাজেই সংসদ ধারে এবং ভারে বিরোধীদের পাল্লা ভারি হয়েছে। কাজেই এবারের পরিস্থিতি একটু আলাদা। এবারে সংসদ অধিবেশন একেবারেই সহজ হবে না মোদি সরকারের কাছে। আগামী ২৩ মে শুরু হচ্ছে সংসদ অধিবেশন। তৃতীয় মোদি সরকারের প্রথম অধিবেশন বসবে। তারমধ্যেই একের পর এক দুর্নীতি ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে বিরোধীরা। এবার আরও জোট বন্ধ ভাবে বিরোধীদের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হবে মোদি সরকারকে।