সোমবার নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি পুলিশ রবিবার পর্যন্ত তদন্তের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু এর মাঝেই কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন আরজি করে আন্দোলনকারীরা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আন্দোলনকারীদের চাপে পরে আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সোমবার সকালে পদত্যাগ করেন। কিন্তু তাঁর পরেও আন্দোলনের আঁচ কমেনি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সোমবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে ৬ দফা দাবির কথা বলেছেন আন্দোলনকারীরা। এবং স্পষ্ট জানিয়েছেন তাঁদের দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতি জারি থাকবে।
আন্দোলনকারীদের দাবিগুলি হল:
১. তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনে বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-সহ যাবতীয় নথিপত্র দিতে হবে আন্দোলনকারীদের হাতে।
২. হাসপাতালের অধ্যক্ষ, এমএসভিপি, ডিন অফ স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার, রেসপিরেটরি মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধানকে লিখিত ভাবে পদত্যাগ করতে হবে। সেইসাথে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। ভবিষ্যতে তাঁদের আর কোনও প্রাতিষ্ঠানিক পদে যাতে রাখা না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
৩. রাজ্যের প্রত্যেক মেডিক্যাল কলেজ ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি নজরদারি, নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন, পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জন্য বিশ্রাম নেওয়ার আলাদা ঘরের বন্দোবস্ত করতে হবে। যাতে কাউকে আর এভাবে সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে না যেতে হয়।
৪. আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক ও পড়ুয়াদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় কলকাতা পুলিশকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
৫. সমাজমাধ্যমে মানহানির জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. তরুণী চিকিৎসকের পরিবারকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিপূরণ বাবদ আর্থিক সাহায্য দিতে হবে।
এই ৬ দফা দাবিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনরত চিকিৎসক ও পড়ুয়ারা। রাজ্য-সহ দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বন্ধ পরিষেবা। তার ফলে চরম ভোগান্তির শিকার রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। এই কর্মবিরতি নিয়ে সোমবার বিকেলে নবান্নে বৈঠকে বসবেন মুখ্যসচিব।