পুজোর আসতে আর মাত্র দেড় মাস বাকি। বাঙালিদের একাংশ পুজোর ছুটিতে ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। তাদের জন্য বেশ কিছু বিরল পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে যা একদিকে ঘুরতে যাওয়ার আনন্দও দেবে আবার অন্য দিকে স্বাভাবিক জীবনের থেকে কিছু দিনের হাওয়াবদলের পরিবেশের স্বস্তিও দেবে। বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে বর্ষাকালে বাংলার সমুদ্রসৈকতের রূপ কিন্তু অনেকটাই আলাদা হয়। কটা দিন একটু বিশ্রাম করেই কাটিয়ে দেওয়া যেতে পারে এই পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে।
প্রথমেই যে সবচেয়ে পরিচিত নাম তা মাথায় আসে বাঙালিদের তা হল দিঘা। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ আর মনোরম আবহাওয়া দিয়ে বছরের পর বছর পর্যটকদের আকর্ষণ করে চলেছে এই স্থান। ভালোবাসার টানে উইকএন্ড কাটাতে বারবারই এখানে এসে হাজির হন পর্যটকরা। বাড়ির কাছাকাছি রিফ্রেশমেন্টের জন্য এর চেয়ে ভাল জায়গা যেন আর কিছু হতেই পারে না। নিউ দিঘার সমুদ্রে পর্যটকরা ভিড় জমান স্নান করার জন্য। ওল্ড দিঘায় আবার বেশি মজা সন্ধেতে। সৈকতে লাইন দিয়ে বিক্রি হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ ভাজা। এর স্বাদ না নিলে তো সফরটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
এর পরেই আসে শঙ্করপুর। দিঘার কাছের এই সমুদ্রসৈকতটি পর্যটকদের বেশ প্রিয়। অনেকে দিঘা ঘুরতে গেলে শংকরপুরেও ঘুরে আসেন। এখানকার সমুদ্রসৈকতটি তুলনামূলকভাবে অনেক শান্ত। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার জন্য এই জায়গাটির কোনো তুলনা হয় না। শঙ্করপুরের পর তালিকায় রয়েছে মন্দারমনি, এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এই সৈকত। শংকরপুরের মতোই এখানকার সমুদ্রও বেশ ধীরস্থির প্রকৃতির। শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশের আকর্ষণেই সাধারণত নবদম্পতিরা মধুচন্দ্রিমার জন্য এই জায়গাকে বেছে নেন। সমুদ্র তীরবর্তী স্থানেই মাথা চারা দিয়েছে ছোট-বড় নানা হোটেল ও গেস্ট হাউস। সুতরাং থাকার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধায় পড়তে হবে না পর্যটকদের। শেষের দুটি পর্যটনকেন্দ্র শুরুতে খুব বেশি পরিমাণে জনপ্রিয়তা অর্জন না করলেও পরে পর্যটকদের কাছে খুব পরিচিত হয়ে যায়। এক তাজপুর ও অন্যটি বকখালি। তাজপুর সৈকতটি বাকি সৈকতগুলোর থেকে অনেক বেশি চওড়া। বেশ অল্প দামে স্কুটি ভাড়া পাওয়া যায়। শান্ত সৈকতের বুক চিরে স্কুটি চালিয়ে ঘুরে নেওয়া যায় গোটা এলাকা। সৈকতের কোনও কোনও স্থানে সারি দিয়ে ঘুরে বেড়ায় অজস্র লাল কাকড়া।
পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দিঘার মতো এখনও ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি বকখালি। তবে দু’দিনের ছুটিতে এই সমুদ্রসৈকতে গেলে মোটেও হতাশ হতে হবে না। পরিষ্কার, শান্ত পরিবেশ আপনার মন জয় করবেই। তবে পর্যটকদের অভাবে এই সৈকতটির আশেপাশে খুব বেশি সংখ্যক হোটেল গড়ে ওঠেনি। বকখালি যাওয়ার পরিকল্পনা করলে আগে থেকে হোটেল বা রিসর্ট বুক করে যাওয়াই ভালো।