এবার থেকে পুলিশের অনুমতি ছাড়া শহরে সমাবেশ, মিছিল করা যাবে না। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে প্রায় প্রতিদিনই মিছিল,সমাবেশ হচ্ছে। আবার রাত দখলের মতো কর্মসূচিও নেওয়া হচ্ছে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন রাত পাহারা দেওয়া পুলিশ কাজ নয় পুজোর দিনগুলোতে রাতে এমনভাবে পুলিশি ব্যবস্থা নেওয়া হয়, যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা হলে তা সামাল দেওয়া সম্ভব হয়। এমন ঘটনা প্রতিদিন সম্ভব নয়। রাতে অশান্তি হলে বয়স্ক মানুষেরা সমস্যায় পড়ছেন। তার এমন বার্তার পরেই কলকাতা পুলিশের কমিশনার বিনীত গোয়েল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কলকাতা পুলিশের অনুমতি ছাড়া শহরে কোথাও সমাবেশ-সভা করা যাবে না।
প্রশাসনের মতে, বহু মিছিল ও মিটিং নাগরিক মঞ্চের নামে রাজনৈতিক দলগুলি এককাট্টা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিশেষ তেড়েফুঁড়ে নেমেছে সিপিএম। পাড়ায় পাড়ায় তারা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে মিছিলের আয়োজন করছে বা স্কুলের প্রাক্তনীদের গ্রুপ বানিয়ে আন্দোলনের আয়োজন করছে। গোটা বিষয়টি ১৪ অগস্টের মতো পুরোদস্তুর স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের জায়গায় নেই। এ সবের নেপথ্যে এখন অনেকটাই রাজনৈতিক প্রভাব কাজ করছে বলে মনে করছে শাসক দল ও সরকার।
সোমবার এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বাধা না দেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু রোজ রোজ পথ আটকে মিছিল, মিটিং করে সাধারণের অসুবিধে তৈরি করা হচ্ছে। জবাবে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছিলেন, সরকার এ বিষয়ে আইনমাফিক পদক্ষেপ করতে পারে। তাতে কোনও বাধা নেই। এর পরই আগের তুলনায় কিছু কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে লালবাজার। রাজ্যের এক মন্ত্রী জানিয়েছেন, এমন নয় যে সরকার গায়ের জোরে প্রতিবাদ আন্দোলন বন্ধ করতে চাইছে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে রাস্তা অবরোধ, অচলাবস্থা তৈরি করে মানুষের অসুবিধা সৃষ্টি করা—এসব আটকানোর চেষ্টা হবে এবার।
আরজি করের ঘটনার পর পাঁচ দফা দাবি নিয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে নেমেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এর পর আবার বুধবার আরএসএসের মিছিল রয়েছে কলকাতায়। এ ব্যাপারে আরএসএস অবশ্য আদালতের থেকে অনুমতি নিয়েছে। কিন্তু এবার সম্ভবত অনুমতি ছাড়া মিছিল মিটিংয়ে আপত্তি আসতে পারে পুলিশের কাছ থেকে।