ফের বিস্ফোরক মন্তব্য কুনালের। দলে ঠিক কোন পদে তিনি অবস্থান করেন তা নিয়ে সর্বদাই থেকে যাচ্ছে ধোঁয়াশা। কিন্তু তৃণমূলের হয়ে যে কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। শুক্রবার অর্থাৎ ৩০ আগস্ট তিনি ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। যেই পোস্টের মাধ্যমে অনেক না বলা কথা বলে দেন যিনি। যেই পোস্টের মূল বক্তব্য ছিল তৃণমূলের ঘনিষ্ট টলি তারকাদের নিয়ে। কুনাল ঘোষ তাঁর পোস্টে পরিষ্কার লিখেছেন, ‘টলিগঞ্জের বাবু-বিবিরা, যাঁরা মমতাদির পাশে, দলে, মঞ্চে, ছবির ফ্রেমে থাকেন, তাঁরা নিজেদের ভাবমূর্তি গড়তে, পেশার সৌজন্য নিয়ে ব্যস্ত। জনমানসে তৃণমূলের পক্ষে ‘সদর্থক বার্তা’ দেওয়ার কথাও টালিগঞ্জ ভাবে না।’
শুক্রবার ফেসবুকে কুণাল লিখেছেন, ‘আফসোস লাগে। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা এমন কিছু রাজনৈতিক ছবি করেন যা সমাজে বিজেপির পক্ষে ন্যারেটিভ তৈরি করে। এবার তো বাংলা নিয়েও কুৎসার ঝুলি আসছে। অথচ টলিগঞ্জের বাবু/বিবিরা, যারা মমতাদির পাশে, দলে, মঞ্চে, ছবির ফ্রেমে থাকেন, তাঁরা নিজেদের ইমেজ গড়তে, পেশার সৌজন্য নিয়ে ব্যস্ত। দিদির পাশে ছবি দিয়ে গুরুত্ব বাড়ান, কিন্তু মমতাদির বায়োপিক বা তৃণমূলের পক্ষে বার্তা যেতে পারে, এমন কোনও সিনেমার কথা তাঁরা ভাবেন না। বরং টেকনিসিয়ানরা অনেক বেশি দরদী। এরা অনেক বড় নাম হতে পারেন, কিন্তু এদের অনেকেই দলের বোঝা। দলের সুসময়ে এরা হাত নেড়ে সামনে থাকেন। একটু বিতর্কিত ইস্যুতে দল পড়লেই এরা মুখ খোলা বন্ধ করেন। সামনে থেকে মানুষকে বোঝানোর কাজে এদের পাওয়া যায় না। দল না বললে কর্মসূচি, টুইটেও পাওয়া যায় না। এই যে এবার বাংলাকে কুৎসিত আক্রমণ করে ছবি আসছে, সারা দেশে/বিদেশে বাংলার ইমেজ খারাপ করার চক্রান্ত, এরা জানেন না? অথচ এরা তার পাল্টা কিছু করবেন না, করতে চাইবেন না। এদের কেউ কেউ আন্তরিক। বাকি ক্ষমতাশালী তারকাদের নিয়ে দল ভাবুক।’
কুণালের এই পোস্ট ঘিরেই তৃণমূলের অন্দরের পাশাপাশি টলি পাড়াতেও রীতিমত হইচই পড়ে গিয়েছে। কুণাল তাঁর পোস্টে যে ছবির কথা বলেছেন তা হল – ‘দ্যা ডাইরি অফ ওয়েস্টবেঙ্গল’ নামের একটি হিন্দি সিনেমা যা পরিচালনা করেছেন সনোজ মিশ্র। এদিনই সিনেমাটি এ রাজ্যে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটির মুক্তি আটকাতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছিল। কিন্তু আদালত ছবি মুক্তিতে হস্তক্ষেপ করেনি। এ বার ওই ছবির প্রসঙ্গে কলকাতার সিনেমাপাড়ার কলাকুশলীদের কুণালের একহাত নেওয়া এখন চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে সর্বত্র। সনোজের ছবিটি নিয়ে মূল অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি খারাপ করার উদ্দেশ্যে ওই ছবি তৈরি করা হয়েছে। কুণালও সে কথাই বলেছেন। সেই সঙ্গে টালিগঞ্জের কিছু শিল্পীকে পরোক্ষে সুবিধাবাদী বললেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, প্রয়োজনের সময়ে ওই শিল্পীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকেন, হাত নেড়ে ছবি তোলেন। কিন্তু শাসকদলের দুঃসময়ে তাঁদের খুঁজে পাওয়া যায় না। তৃণমূলের বিভিন্ন সভায় মঞ্চে টালিগঞ্জের অনেক তারকাকেই থাকতে দেখা যায়। কিন্তু দলের দুঃসময় কেন তাদের পাশ পাওয়া যায় না তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন কুনাল।