আর মাত্র ২ দিন পরেই শুরু হবে তারকেশ্বরের শ্রাবণী মেলা। শ্রাবণ মাস আসলেই শুরু হয়ে যাবে তারকেশ্বরে ভক্তদের ঢল। শতাব্দী প্রাচীন এই মেলাকে দূষণ মুক্ত করতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক মুক্তা আর্যর নেতৃত্বে হরিপালে বিশ্বনাথ সেবা সমিতিতে উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক হয়। এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গঙ্গার ঘাটে কোনোরকম দুর্ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য কড়া নজরদারি রাখতে হবে সেচ দফতরকে। প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করতেও কড়া মনোভাব নিয়েছে প্রশাসন। বাড়ানো হবে বাসের সংখ্যা। বাড়তি ট্রেনের জন্যও বলা হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষকে।
বৃহস্পতিবার তারকেশ্বর মন্দির সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করতে আসেন হুগলির জেলাশাসক মুক্তা আর্য, হুগলি গ্রামীণ পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন এবং রাজ্যের দুই মন্ত্রী বেচারাম মান্না ও স্নেহাশিষ চক্রবর্তী। হাজির ছিলেন তারকেশ্বরের বিডিও সীমা চন্দ্র ও বিধায়ক রামেন্দু সিংহরায়। এ বছর গুরু পূর্ণিমার দিন ২১ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে মেলা, শেষ হবে আগামী ১৯ অগস্ট রাখি পূর্ণিমায়। জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘বিপুল সংখ্যক মানুষের জমায়েতে যাতে কোনও অঘটন না ঘটে তার জন্য প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রশাসনের সমস্ত দপ্তরের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে সুষ্ঠ ভাবে শ্রাবণী মেলা সম্পন্ন করা হবে।’
প্রতিটি পঞ্চায়েত ও পুরসভাকে বাধ্যতামূলক ভাবে ক্যাম্প করতে হবে। জরুরি পরিষেবার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। রাস্তায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো লাগাতে হবে। মেলার সময় জল নিয়ে বৈদ্যবাটি ও শেওড়াফুলি থেকে হেঁটে তারকেশ্বর যান ভক্তরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই পথে ঘণ্টায় প্রায় ১৫ হাজার লোক যান মন্দিরের পথে। কিন্তু ফেরার সময় সকলেই ট্রেনে ফেরেন। কিন্তু একটি ট্রেনে চড়তে পারেন মাত্র ৩ হাজার লোক। তাই বিপুল যাত্রীর চাপ সামাল দিতে কুড়ি মিনিট অন্তর বাড়তি ট্রেন চালানোর আর্জি জানানো হয়েছে রেলকে।
মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, ‘লক্ষ লক্ষ ভক্ত শ্রাবণী মেলায় অংশ নেন। বিদ্যুতের খুঁটি থেকে যাতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা না ঘটে, তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ ছাড়া রেলগেটগুলিতে ভিড়ের চাপ সামাল দিতে রেলরক্ষী বাহিনী ও জিআরপি-র সংখ্যা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো ও গঙ্গার ঘাটগুলিতে বালির বস্তা ফেলে দুর্ঘটনা সামাল দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। কোনও প্লাস্টিক ব্যবহার করা যাবে না।’ অন্যদিকে পরিবহন মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘ভক্তদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য শনিবার ভোর থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত আধঘণ্টা অন্তর ৫০টি বাস সাঁতরাগাছি, বর্ধমান ও বিভিন্ন রুটে চালানো হবে। প্রয়োজনে বাস ধর্মতলা পর্যন্ত যাবে।’ এ দিন বৈঠকের পর তারকেশ্বর মন্দির চত্বর, বৈদ্যবাটি তারকেশ্বর রোড নিমাইতীর্থ ঘাট-সহ ছ’টি গঙ্গার ঘাট পরিদর্শন করেন মন্ত্রী-আমলারা।