রসগোল্লা, বাঙালির গর্ব, ভারতের কি না – এই প্রশ্ন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি এই বিতর্ক আবারও মাথা চাড়া দিয়েছে।
ওড়িশার দাবি:
ওড়িশা সরকার দাবি করেছে যে রসগোল্লা তাদের রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি।তাদের যুক্তি হল, ‘ছেনা গোল্লা’ নামে একটি অনুরূপ মিষ্টি ওড়িশায় শতাব্দী ধরে তৈরি করা হচ্ছে।রসগোল্লার উৎপত্তি নিয়ে লেখা কিছু প্রাচীন পুঁথিতেও ওড়িশার উল্লেখ পাওয়া যায় বলে তারা দাবি করে।
বাংলার দাবি:
অন্যদিকে, বাঙালিরা দাবি করে যে রসগোল্লা তাদের নিজস্ব আবিষ্কার।১৮ শতকের শেষভাগে ফুঁটিয়ে তোলা ছেনা দিয়ে রসগোল্লা প্রথম তৈরি করা হয়েছিল বলে বিশ্বাস করা হয়।কলকাতার কাছে ফুলিয়া শহরকে রসগোল্লার জন্মস্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) ট্যাগ:
২০১৭ সালে, ভারত সরকার রসগোল্লার জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) ট্যাগ মঞ্জুর করে।এই ট্যাগ পশ্চিমবঙ্গের চারটি জেলা – কলকাতা, নদীয়া, দক্ষিণ 24 পরগনা এবং হুগলিকে রসগোল্লার উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।ওড়িশা সরকার এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করছে।
বিতর্কের প্রভাব:
এই বিতর্ক রসগোল্লার ব্যবসায়িকদের উপর প্রভাব ফেলছে।কিছু ক্রেতা রসগোল্লা কেনার ব্যাপারে দ্বিধাবোধ করছেন, কারণ তারা জানেন না কোনটি আসল।এই বিতর্ক রসগোল্লার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিগত গুরুত্বকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।
এই বিতর্কের সমাধানের জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজন।ঐতিহাসিক প্রমাণ ও গবেষণার মাধ্যমে রসগোল্লার আসল উৎপত্তি নির্ধারণ করা উচিত।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল রসগোল্লা রক্ষা করা, যা ভারতের একটি মূল্যবান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।
রসগোল্লা ভারতের একটি জনপ্রিয় মিষ্টি, যার ঐতিহ্য ও স্বাদ অসামান্য। এই মিষ্টির উৎপত্তি নিয়ে বিতর্ক থাকলেও, এটি নিসন্দেহে ভারতীয় সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।