রাজভবনে শ্লীলতাহানির বিষয়টি নিয়ে ন্যায়বিচার চেয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে এর আগেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাজভবনের ‘নির্যাতিতা’। মামলাটি এখন সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু এবার আর সুপ্রিম কোর্ট নয় রাজভবনের ঘটনা সবিস্তারে জানিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দ্বারস্থ হলেন ওই নির্যাতিতা। সপ্তাহখানেক আগেই ওই মহিলা কর্মী রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইমেল মারফত পুরো বিষয়টি জানান। তবে এই সপ্তাহে আরও একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ‘নির্যাতিতা’। এর ফলে কী নতুন করে চাপ বাড়ছে সিভি আনন্দ বোসের? সেই নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
গত শুক্রবার এই মামলাটি প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চে ওঠে। মোট তিনটি নির্দেশ দেয় তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সেই নির্দেশে বলা হয়, রাজ্যের উদ্দেশ্যে নোটিস জারি, কেন্দ্রকে যুক্ত করতে অনুমতি দেওয়ার পাশাপাশি বেঞ্চের নির্দেশ, কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল যাতে এই মামলায় সহযোগিতা করেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। গত ২ মে রাজভবনের এক অস্থায়ী মহিলা কর্মচারী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিল। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচের জন্য তার বিরুদ্ধে কোনোরকম অভিযোগ দায়ের করেনি কলকাতা পুলিশ তবে অভিযোগ দায়ের করা না হলেও ওই নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিলো কলকাতা পুলিশ।
ডিসি (সেন্ট্রাল) এই বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হন বলেও লালবাজার সূত্রে জানা যায়। এমনকি পুলিশ নিজে উদ্যোগ নিয়ে অভিযোগকারিণীর বয়ানের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য রাজভবনের সিসি ক্যামেরার কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল। সেই সঙ্গে মহিলাকে পুলিশের কাছে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজভবনের কয়েক জন আধিকারিকের নামে মামলাও রুজু করেছিল পুলিশ। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্টের স্থগিতাদেশে সেই তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়। এর পর গত ৩ জুলাই সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন ‘নির্যাতিতা’। প্রথমত, জরুরি প্রয়োজনে তদন্তের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ যেন রাজ্যপালের বয়ান রেকর্ড করতে পারে। দ্বিতীয়ত, অভিযোগকারিণীকে যেন সুরক্ষা দেয় পুলিশ। তৃতীয়ত, অভিযোগকারিণীর পরিচয় গোপন রাখা হয়নি। এর জন্য যেন তাঁকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। চতুর্থত, ৩৬১ নম্বর অনুচ্ছেদে থাকা রক্ষাকবচ রাজ্যপাল কতটা ব্যবহার করতে পারেন, তা নিয়ে বিধি তৈরি করুক শীর্ষ আদালত।